সর্দি কাশি নিরাময়ের ঘরোয়া উপায়

আট থেকে আশি মাত্র এক গ্লাস এই বিশেষ পানীয় পান করলেই জ্বর সর্দি কাশির সকল জীবাণু শরীর থেকে দূর হয়ে যাবে। সর্দি কাশি ঠান্ডা বা গলার খুসখুস হওয়ার সমস্যা তো আবহাওয়া পরিবর্তন হওয়ার সাথে সাথে বাচ্চা থেকে বয়স্ক সকলের এই সমস্যা লেগে থাকে। বিশেষ করে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে গেলে এই সমস্যাগুলো বেশি দেখা দেয়। বিশেষ উপায়ে একটি পানীয় তৈরি করে আপনারা যদি খেতে পারেন, তাহলে খুব দ্রুত এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এটি একটি অসাধারণ ঔষধি গুণসম্পন্ন উপায়, জেনে নিন কিভাবে তা তৈরি করা সম্ভব।

আপনাকে একটি পাত্রের মধ্যে দুই কাপ পরিমাণ জল নিতে হবে। তার সাথে নিতে হবে ব্ল্যাক পেপার বা গোল মরিচ। গোলমরিচ সর্দির জন্য ভীষণভাবে উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা আমাদের মেটাবলিজম ক্ষমতাকে বুস্ট করে। আর এই গোলমরিচ গলার ব্যথা, কফ দূর করার পাশাপাশি আমাদের গলার ভয়েস সিস্টেমের উপর ভীষণভাবে কাজ করে। ফলে আমাদের সর্দি কাশি খুব সহজেই দূর হয়ে যায়। এবার আপনারা ১০ থেকে ১২ টি গোলমরিচের দানা নেবেন। আপনার যদি মনে করেন তাহলে এটিকে পেস্ট করেও নিতে পারেন। এবার ওই গোলমরিচকে ফুটন্ত জলে দিতে হবে। এরপর সেই গোলমরিচ ফোটানো জলে দুটি লবঙ্গ দেবেন, এক্ষেত্রে দুটি বা তিনটি লবঙ্গই যথেষ্ট। তবে মনে রাখবেন লবঙ্গ নেওয়ার আগে লবঙ্গের উপরে যে ফুল বা দানাটা রয়েছে সেটি যেন অবশ্যই থাকে। তাই ভালো করে দেখে ফুলযুক্ত গোটা লবঙ্গ নেবেন।

এরপর যোগ করতে হবে আদার পাউডার, তা যদি সম্ভব না হয় তাহলে বাড়িতেই আদার একটি মিশ্রণ তৈরি করে ব্যবহার করতে পারেন। আদা আমাদের সর্দি কাশির জন্য বেশ উপকারী। এটি আপনাকে গলা ব্যথা থেকেও মুক্ত রাখে। এর পাশাপাশি এটি আপনার শরীর কেও গরম রাখে। আর আদা আমাদের শরীরের ওজন ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে গ্যাস অ্যাসিডিটির সমস্যাকেও দূর করে। আদা খাওয়া মাত্র পেটের ভেতর থেকে সকল গ্যাস দূর হয়ে যায় এবং আমাদের মেটাবলিজম ক্ষমতাকে বুস্ট করে। যাই হোক আপনারা এই মিশ্রণের সাথে কিছুটা আদা পেস্ট বা পাউডার মিক্স করবেন। এই সবগুলো উপাদান পাঁচ মিনিট সময় নিয়ে গরম করে নেবেন।

 এরপর আপনাকে তুলসী পাতা ব্যবহার করতে হবে। তুলসী আমাদের সর্দি কাশির জন্য বিশেষ উপকারী। তুলসী একটি ভেষজ ওষুধ। তুলসী পাতা পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ঔষধি গুণসম্পন্ন পাতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এটা ফুসফুসের দুর্বলতা, কাশি, শ্বাসকষ্ট, সর্দি জ্বর ,চর্মরোগ, হাঁপানি, হাম ,বসন্ত ,কৃমি, ঘামাচি রক্তের শর্করার পরিমাণকে হ্রাস করা, পেটের মধ্যে বসবাসকারী অবাঞ্ছিত কিটকে ধ্বংস করা, কানে ব্যথা, ব্রংকাইটিস ,আমাশয়, অজীর্নতা এই সমস্ত রোগে তুলসী পাতার উপকারিতা রয়েছে। বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সকল মেডিকেল সাইন্স এর বইয়ে এই তুলসী পাতার কথা বলা হয়েছে। এবার ওই জলের মধ্যে পাঁচ থেকে আটটি তুলসী পাতা দেবেন।

 এবার সর্বশেষ যে উপাদানটি মেশাবেন তা হলো গুড়। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে আপনাকে বিশুদ্ধ আখের গুড় সংগ্রহ করে রাখতে হবে। বিশুদ্ধ আখের গুড় ভীষণভাবে উপকারী। এটি গলা ব্যথা, কাশি, পেটের জ্বালাপোড়াভাবের হাত থেকে রক্ষা করে। এবার সবগুলো উপকরণ একসাথে মিশিয়ে নেবেন। এবার ওই মিশ্রণটি ততক্ষণ ফোটাতে হবে যতক্ষণ না পর্যন্ত দুই কাপ পরিমাণ জল ফুটে এক কাপ জলে পরিণত হয়। তারপর এটিকে ছেঁকে নিয়ে একটি কাপে ঢেলে নেবেন। ব্যস তারপর তৈরি হয়ে গেল বিশেষ পানীয়। যা আপনার সর্দি কাশি ঠান্ডা বা গলা খুসখুসের হাত থেকে আপনাকে রক্ষা করবে।