আমাদের আশেপাশেই সুলভ ও সহজলভ্য লতা, সবজি, মূল, ছাল, পাতা, ফুলের মধ্যেই ছড়ানো রয়েছে বিভিন্ন অসুখের চিকিৎসা। সেগুলো চিনে নিতে হবে। সেগুলির গুণাগুণ জানতে পারলে এবং সুষ্ঠু প্রয়োগে সমগ্র পরিবার থাকবে সুস্থ। আগেকার দিনে মা’ঠাকুরমারা তাঁদের অভিজ্ঞতা থেকে নানা ছোটখাটো রোগের চিকিৎসায় গাছগাছড়ার প্রয়োগ করতেন। তাতেই রোগের নিরাময়ের হদিশ মিলত। আর সেগুলি কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই। দেখে নেওয়া যাক কোন কোন রোগে আয়ুর্বেদ চিকিৎসা হয়ে ওঠে প্রবল কার্যকরী।
শিশুদের সর্দিতে: ৪-৫ফোঁটা তুলসীপাতার রস, ১- ৩ ফোঁটা মধু সহ খেলে সর্দির প্রবণতা কমে। কাশি হলে তাও কমে যায়। হুপিং কাশিতে তুলসীমঞ্জরি বাটা মধু সহ সেবন করলে উপকার হবে।
কৃমিতে: আসশেওড়া পাতার রস বা আনারস পাতার রস বা পালতেমাদার পাতার রস বা ঘেঁটু পাতার রস (২ চামচ) সাতদিন খাওয়ালে উপকার হয়। ফোড়ায়: নিমপাতা বেটে গাওয়া ঘি মিশিয়ে ফোড়ায় লাগালে উপকার হবে।
অকালে চুল পাকলে: নিমফলের থেকে যে তেল হয় সেটি সারা দিনে সাত আটবার মাথায় মাখলে উপকার হয়।
ব্লাড প্রেসার থাকলে: সজিনা পাতা জলে সেদ্ধ করে ছেকে বেশ কিছুদিন খেলে উপকার হয়। থোড়ের রস প্রতিদিন ১/২ কাপ করে খেলেও উপকার হয়।
চর্মরোগে (চুলকানি কমাতে): পদ্ম গুলঞ্চের রস ১/২ কাপ নিয়মিত খালি পেটে খেলে উপকার হয়। ওই তেল, তিল তেলের সঙ্গে পাক করে চুলকানির স্থানে লাগালে উপকার হবে। হজম শক্তি বাড়াতে: যষ্টি মধু এবং আমলকীচূর্ণ মিশিয়ে ৩ গ্রাম মাত্রায় দিনে ২-৩ বার খেলেই উপকার হবে। কোষ্ঠবদ্ধতায়: প্রত্যেকদিন সকালে হরীতকী চূর্ণ৪-৬ গ্রাম মাত্রায় এক কাপ গরম জল সহ খেলে কোষ্ঠবদ্ধতা দূর হয়।
মাথা ব্যথায়: আমলকীর রসে শেতচন্দন ঘষে সেই প্রলেপ মাথায় লাগালে মাথা ধরা কমে। তাছাড়া মান্দার (মাদার) গাছের পাতা বাটা বা রস কপালে প্রলেপ দিলে আধকপালী রোগে উপকার হয়। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি, প্রতিদিন একটি করে কাঁচা আমলকী ফল ভাতের সঙ্গে সিদ্ধ করে খেলে শরীরের রুক্ষতা নষ্ট হয়। দুর্বল হৃদযন্ত্র সবল করে। রক্তচাপে স্থিরতা আনে।
সন্তানসম্ভবার বমি বমি ভাব ও বমিতে: ধানের চাল বাটা খাওয়ালে উপকার হয়। মৌরি চিবালেও অনেক উপকার পাওয়া যায়।
মুখে ঘা: সোঁদাল গাছের পাতা চিবালে মুখের ঘায়ে উপকার হয়। তাছাড়া হাত ও পায়ের একজিমাতে সোঁদাল (বাঁদরলাঠি) পাতা তেলের সঙ্গে বেটে আক্রান্ত স্থানে লাগলে উপকার পাওয়া যায়। সোঁদালের আঠার সঙ্গে ৭-৮ গ্রাম মধু বা গরম জলের সঙ্গে খেলে কোষ্ঠ পরিষ্কার হয়।
মুখে বা শরীরে কালো দাগ হলে: মঞ্জিষ্ঠা চূর্ণ মধু সহ লাগালে উপকার হয়।
অতিরিক্ত এবং অনিয়মিত মেনস্ট্রুয়েশনে: অশোক ছাল ও যষ্ঠি মধুর কাছে লাক্ষাচূর্ণ একগ্রাম মতো মিশিয়ে পান করলে উপকার হয়।
গাড়িতে উঠে বমি পেলে: অশ্বথ গাছের ছাল পুড়িয়ে জলে ফেলুন। সেই জল বোতলে পুরে গাড়িতে ওঠার পর একটু একটু করে পান করুন। এক লিটার জলে ২০০ গ্রাম মতো ছাল দিলেই হবে।