কোলেস্টেরল কি? What is Cholesterol?

•• এটি শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। জীবজগতের সৃষ্টির পিছনে অন্যতম মূল কারিগরও বটে। আমরা সবাই জানি, প্রাণীজগৎ তৈরি হয়েছে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সেল বা কোষের সমন্বয়ে। আর এইসব কোষ বা সেল তৈরি হয়েছে কোলেস্টেরলের হাত ধরেই। সহজ কথায়, কোলেস্টেরল না থাকলে ডাইনোসরাস থেকে মানুষ, কেউই আমরা ‘প্ল্যানেট আর্থে’র বাসিন্দা হওয়ার সুযোগ পেতাম না।

কোলেস্টেরলকে আমরা আমাদের শরীরের শত্রু বা খলনায়ক বলে বিবেচনা করে থাকি। বাস্তবে কিন্তু কোলেস্টেরল একেবারেই খারাপ নয়। তবে যতক্ষণ তা নিয়ন্ত্রণে আছে, কেবলমাত্র ততক্ষণ পর্যন্তই।

• কখন এটি ক্ষতিকারক?

•• রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা একটি নির্দিষ্ট গন্ডির বাইরে চলে গেলেই নানা সমস্যা হতে শুরু করে। আমাদের রক্তের চরিত্রটা অনেকটা ঘোলের মতো। লস্যি যেমন একটু থকথকে হয়, তেমনিই কোষ, নানা বায়োকেমিক্যাল সাবস্টেন্স এবং অবশ্যই কোলেস্টেরল নিশে রক্তও তঅনেকটা একই গোত্রের হয়ে যায়। আর কোলেস্টেরলের মাত্রা যখন বাড়ে, তখনই ঘনত্ব বেড়ে রক্ত অনেকটা লস্যি থেকে মোবিলের মতো হয়ে যায়। সঙ্গে রক্তবাহী নালিগুলিতে জমতে শুরু করে ময়লা। ছোট হতে শুরু করে রক্তনালীগুলি। এক সময় নালীগুলি একেবারে ছোট হয়ে গিয়ে শুরু হয় নানা ধরনের সমস্যা। প্রসঙ্গত, কোলেস্টেরল মূলত দু’ধরনের হয়। এইচ ডি এল (HDL) এবং এল ডি এল (LDL)। হাই ডেনসিটি লাইপো প্রোটিন কোলেস্টেরল বা এইচ ডি এল কিন্তু খারাপ নয়। এটি শরীরের রক্ষাকবচ হিসাবে কাজ করে। কিন্তু ‘এল ডিল এল’ প্রকৃত অর্থেই ‘ভিলেন’, বড়ই ক্ষতিকারক। রক্তে

কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়া বলতে আদতে’এল ডি এল’ বেড়ে যাওয়াকেই বোঝানো হয়ে থাকে।

• রক্তে কোলেস্টেরল বেড়েছে কিনা জানতে কী কী টেষ্ট করা হয়?

• এক্ষেত্রে মূলত ফাস্টিং ব্লাড টেস্ট করা হয়ে থাকে।

• কোলেস্টেরলের স্বাভাবিক মাত্রা কত?

• রক্তে টোটাল কোলেস্টেরল যদি ২০০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার থাকে তাহলে কোনও ক্ষতি নেই। কিন্তু যখনই তা ২৪০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার বা তার বেশি হয়ে যায়, তখনই শুরু হয় নানা ধরনের সমস্যা।

• গত কয়েক বছরে আমাদের দেশে হাই কোলেস্টেরলে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। কারণ কী?

• মূল কারণ একটাই, ডায়েট। আমরা যত আধুনিকতার দিকে এগিয়ে চলেছি, তত মুচমুচে, ভাজাভুজি খাবারের দিকে আমাদের ঝোঁক বাড়ছে। সঙ্গে তাল মিলিয়ে কমছে শারীরিক কসরত করার প্রবণতা। যা শুধু কোলেস্টেরল নয়, সঙ্গে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং অবশ্যই হার্ট অ্যাটাকের মতো নন-কমিউনিকেবল ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়াচ্ছে। দুঃখের বিষয়, ফ্রায়েড ফুড সে খারাপ তা ভারতীয়দের বুঝতে বুঝতেই তিন শতাব্দী পেরিয়ে গিয়েছে। আর বর্তমানে যা অবস্থা তাতে যদি এখনই সাবধান হওয়া না যায় তাহলে আগামী দিনে হাই কোলেস্টেরলে আক্রান্তের সংখ্যা যে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়বে সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।