• ডায়েটে মন দিন। দেখবেন হাই কোলেস্টেরলের ভূত আপনা থেকেই দূরে পালাবে। এক্ষেত্রে কতগুলি নিয়ম মেনে চলতে হবে। যেমন- ভাজাভুজি যতটা পারবেন কম খাবেন। একেবারে না খেলেই ভালো ‘তৈলস্নাত’ খাবার এড়িয়ে চলবেন। ভুলে যাবেন না ‘ফ্যাট ইজ লিঙ্ক টু টেস্ট, টেস্ট ইজ লিঙ্ক টু অ্যাফলুয়েন্স’ প্রতিদিন নিয়ন করে শরীরচর্চা বা হাঁটাইটি করবেন। শরীরে যাতে অতিরিক্ত মেদ না জমে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। সঙ্গে আরেকটি জিনিস নিয়ম করে করবেন। তা হল, অফিসে বা বাড়িতে লিফট ব্যবহার না করে সিঁড়ি দিয়ে উঠবেন, নামবেন। শপিং মল বা মেট্রো স্টেশনে এসকেলেটারের পরিবর্তে সিঁড়ি ব্যবহার করবেন। এতে আপনার মেদ তো ঝরবেই, সঙ্গে বাড়বে আয়ুও বছরে অন্তত দু’বার চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না। প্রয়োজনে কিছু টেস্ট করে দেখে নেবেন কোনও গুপ্তঘাতক বাসা বেঁধেছে কিনা।
• হাই কোলেস্টেরল থেকে দূরে থাকতে ডায়েট কেমন হবে?
• এক্ষেত্রে ব্যালেন্স ডায়েট মেনে খাওয়াদাওয়া করতে হবে। ডায়েট প্ল্যান হবে এইরূপ-
• প্রচুর পরিমাণে ফল ও শাকসবজি খেতে হবে। এই দুটি খাদ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা কোলেস্টেরলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে বেশ পারদর্শী।
• ভাজাভুজি খাওয়া একেবারেই চলবে না। ফ্রায়েড ফুডে প্রচুর মাত্রায়। মনোস্যাচুরেটেড এবং ট্রান্স ফ্যাট থাকে, যা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক। • ঢেঁকি ছাঁটা চাল বা ব্রাউন রাইস খেতে পারেন। এই ধরনের চালেও প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে।
• যত পারবেন মাছ খাবেন। মাছে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে যা ট্রাইগ্লিসারাইড কমিয়ে শরীরকে ভালো রাখে। তবে অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত মাছ খাওয়া একেবারেই চলবে না।
• আমরা কম-বেশি সকলেই খাবার খাওয়ার সময় আলাদা করে নুন খেতে অভ্যস্ত। এই অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। রান্নায় যেটুকু নূন ব্যবহার করা হয়েছে তার বাইরে এক টিপ নুনও খাওয়া চলবে না। • সরষের তেল না অলিভ অয়েল-
কোলেস্টেরল কমাতে কোনটা ভালো? • কী তেল ব্যবহার করছেন তার থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিদিন কতটা পরিমাণ তেল খাচ্ছেন। একথা ঠিক যে অলিভ অয়েল সরষের তেলের তুলনায় একটু হলেও ভালো। তবে তা আমাদের খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে আদৌ যায় কিনা, সে নিয়ে সন্দেহ আছে। তাই কী তেল খাচ্ছেন, তা না ভেবে তেল খাওয়ার পরিমাণ কমান।
৪০ বছরের পর থেকে মাসে ৫০০-৬০০ মিলি লিটার তেলের বেশি খাবেন না। সঙ্গে ভাজাভুজি কম খাবেন। দেখবেন তেল না বদলিয়েও অনেক সুস্থ আছেন।
• ডিম খাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও নিয়ম? •• অনেকেই মনে করেন বেশি ডিম খাওয়া নাকি শরীরের পক্ষে ভালো না। এই ধারণা ভুল। যাদের অন্যান্য কোনও রোগ নেই তারা সপ্তাহে দুটো করে ডিম খেতেই পারেন। আর যারা ডিমের সাদা অংশ খান, তারা রোজ খেলেও কোনও ক্ষতি নেই। ভাবছেন কোলেস্টেরল ধরা পরার পর কী করবেন? কোনও চিন্তা নেই। ডিমের সাদা অংশ রোজ খান, কিছু হবে না!
• পাঁঠার মাংস খাওয়া কি কমাতে হবে?
•• শুধু পাঁঠার মাংস নয়, যে কোনও রেড মিটই বেশি খাওয়া ভালো নয়। সাঁদের কোনও নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ নেই তারা মাসে দু’বার কব্জি ডুবিয়ে পাঁঠার মাংস খেতেই পারেন। তবে যাঁদের কোলেস্টেরলের সমস্যা ধরা পড়েছে তাঁদের পাঁঠার মাংস ছোঁয়া নৈব নৈব চ!
• রোজ সকালে এক কোয়া রশুন খেলে নাকি ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল কমে। এই তত্ত্ব ঠিক না ভুল?
এই তত্ত্বটির সমর্থনে এখনও পর্যন্ত কোনও বৈজ্ঞানিক গবেষণা পাওয়া যায় নি। তবে জেনে রাখা ভালো যে এটি একেবারেই খারাপ অভ্যাস নয়। তাই কেউ ইচ্ছা হলে প্রতিদিন এক কোয়া করে রশুন খেতেই পারেন।
• সব শেষে, হাই কোলেস্টেরলের মতো নন কমিউনিকেবল ডিজিজের থেকে দূরে থাকার গাইড লাইন…
•• এক্ষেত্রে কতগুলি সহজ নিয়ম মেনে চলতে হবে। যেমন-
• খাওয়ার জন্য নয়, বরং বাঁচার জন্য খেতে হবে- এই নীতিটি মেনে জীবন অতিবাহিত করলে দেখবেন কোনও সমস্যাই হচ্ছে না।
• প্রতিদিন ১৫-২০ মিনিট শরীরচর্চা করতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না পরিমিত আহারে সঙ্গে যদি শরীরচর্চা না করেন, তাহলে কিন্তু কোনও লাভই হবে না।
• ধূপপান ছাড়তে হবে। মদ্যপান করতে হবে নিয়ন্ত্রণে।
• মাসে একবার ওজন নিয়ে দেখবেন আপনার বি এম আই (বডি মাস ইনডেক্স) ঠিক আছে কিনা। প্রসঙ্গত, বি এম আই ২৫ এর নীচে থাকা শরীরের পক্ষে ভালো।