রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে যা যা জরুরি -জেনে নিন

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে জন্য শরীরে সোডিয়ামের পরিমাণ সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখা একান্ত জরুরি। আর তার জন্য কাঁচা নুন বর্জন করতে হবে। ভাতের পাতে যাঁদের কাঁচা নুন খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে তাঁরা সেই অভ্যাস ত্যাগ করুন।

তবে এর পাশাপাশি এটাও জেনে রাখতে হবে যে, সোডিয়ামের পরিমাণ যেন কমে না যায়। তাতে আবার অন্য সমস্যা দেখা দিতে পারে শরীরে। আমাদের দেশে আবহাওয়ায় বেশি পরিমাণ আর্দ্রতা থাকে। ঘাম দিয়ে শরীর থেকে সোডিয়াম বেরিয়ে যায়। আর এই গরমভাব থাকার জন্য শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকা খুব জরুরি। ফলে শীতপ্রধান দেশে যে পরিমাণে সোডিয়াম গ্রহণ করার দরকার পড়ে আমাদের দেশে তার থেকে বেশি সোডিয়াম গ্রহণের দরকার। কাঁচা নুন না খেয়ে বরং রান্নায় স্বাভাবিক নুন দিন। তাহলে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেবে না। যদি কিডনির সমস্যা থাকে তাহলে অন্য কথা। অন্যান্য কোনও শারীরিক সমস্যা থাকলেও চিকিৎসকের পরামর্শ

নেনে রান্নায় নুন ব্যবহার করবেন।

ডায়েটে রাখুন মরশুমি শাক-সবজি

তাজা শাকসবজি স্বাস্থ্যের পক্ষে যেমন ভালো তেমনই ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণেও নিয়মিত শাকসবজি খাওয়া খুব দরকার। শীতকালের অন্যতম সবজি পালং শাক তো ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে খুব বেশি সাহায্য করে। কারণ এতে রয়েছে পটাশিয়াম। মরশুমি সবজি খাওয়ার কথা বলার অর্থই হল যে সময়ে যেই সবজি পাওয়া যায় সেই সময় সেই সবজি খাবেন। গরমকালে যদি আপনি ফুলকপি কিনে খান তাহলে সেটা কোনও উপকারে আসে না। ওটা শীতকালেরই সবজি। তাই গরমকালে যে সবজি বাজারে পাওয়া যায় সেই সবজি পর্যাপ্ত পরিমাণে খান। প্রতিদিন দুপুরের মেনুতে বাটি ভরতি করে সবজি খাবেন।

লাউ কতটা উপকারী: ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে লাউয়ের কথা শুনে থাকি। লাউ অবশ্যই রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য একটা উপাদেয় সবজি। কারণ এতে রয়েছে পটাশিয়াম ও ফসফরাস। যা প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। আবার লাউতে ফসফরাস থাকে বলে আমরা এই সবজি বেশি পরিমাণে খেতেও পারি। তবে এক্ষেত্রেও

সেই একই কথা বলতে হয় যে, লাউ

কিন্তু শীতকালের সবজি। তাই অন্য সময়ে লাউ খেলে সেই উপকার পাওয়া যায় না। আরও কয়েকটি সবজিতে প্রচুর পরিমাণে ফসফরাস ও পটাশিয়াম থাকে। যেমন থোড়, চালকুমড়ো, শিম, বরবটি খাওয়া খুব ভালো। আবার এতে ক্যালরির ভাগও অনেক কম। রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অনেকেই আবার থোড়ের রস খেয়ে থাকেন। এটা খুব উপকারী।

ভাত কতটা খাবেন:

প্রেসারের জন্য ভাত খাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও বাড়তি সতর্কতার প্রয়োজন নেই। যতটা পরিমাণ ভাত খাওয়ার প্রয়োজন হয় ততটা খেতে পারেন। তবে শরীরে অন্য

কোনও সমস্যা থাকলে আলাদা কথা।

মরশুমি ফল খান:

মরশুমি সবজির পাশাপাশি মরশুমি

ফলও খান নিয়ম করে। যে সময়ে যে ফল পাওয়া যায় সেই ফলই খাবেন। যে কোনও লেবু যেমন পাতিলেবু, কমলালেবু, মুসাম্বিলেবুর মতো ফলগুলি খাওয়া ভালো। লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। আবার রক্তচাপকে স্বাভাবিক রাখার জন্য নিয়ম করে পাকা কলাও খেতে পারেন। ফল ও সবজি মিলিয়ে সারাদিন ও রাতে তিন থেকে চারবার খাবার গ্রহণ করলে তাতে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সুবিধা হয়।

স্নেহজাতীয় খাদ্য বর্জন করুন:

স্নেহ বা ফ্যাটজাতীয় খাবার বর্জন করুন। বিশেষত স্যাচুরেটেড ফ্যাটজাতীয় খাবার একেবারেই খাবেন না। যেমন খাসির মাংস, ডিমের কুসুম, নাছের ডিম, মাছের মাথা, কাতলার পেটি ইত্যাদি। এই ধরনের খাবারগুলো তালিকা থেকে বাদ দিন।

নিয়ম করে শরীরচর্চা করুন:

ডায়েটে শুধু যে খাওয়াদাওয়ার ক্ষেত্রে একটা নিয়ম মেনে চলতে হবে তাই নয়। সেইসঙ্গে একটা সুসংহত জীবনযাপন করাও দরকার। নিয়ম করে সকালে হাঁটাচলা করুন। কর্মক্ষেত্রে বা পারিবারিক জীবনে নানা ঘটনার কারণে মানসিক চাপ আসতে পারে। কিন্তু সেই চাপ কাটিয়ে উঠুন। শারীরিক উত্তেজনাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ওষুধ:

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ডাইগিউরেটিক জাতীয় ওষুধ গ্রহণ করার দরকার হয়। তবে নিয়ম করে ওষুধ গ্রহণ করা একান্ত জরুরি। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনও ওষুধ খাবেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *