সরাসরি সুগারের সঙ্গে কারও রক্তে কোলেস্টেরল বাড়া বা কমার কোনও সম্পর্ক নেই। তবে একটা বিষয় বলা দরকার। মাত্রাতিরিক্ত কোলেস্টেরলে ভূগছেন এবং সঙ্গে ডায়াবেটিসও আছে এমন রোগীর রক্তে ‘এইচ ডি এল’ বা ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ উচ্চকোলেস্টেরলে ভুগছেন কিন্তু সুগার নেই এমন রোগীর তুলনায় সামান্য কম থাকে।
আসলে কোলেস্টেরলের তো অনেক ভাগ আছে। এল ডি এল মানে খারাপ কোলেস্টেরল, এইচ ডি এল মানে ভালো কোলেস্টেরল। তাই এল ডি এল যত কম থাকবে তত ভালো। এইচ ডি এল যত বেশি থাকবে তত মঙ্গল।
এই প্রসঙ্গে একটা কথা বলি, কারও ডায়াবেটিস থাকলে কোলেস্টেরলের মাত্রার সঙ্গে লিপিড প্রোফাইলও পরীক্ষা করে দেখা হয়। সেই পরীক্ষায় ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা দেখতে হয়। কারণ আর কিছুই নয়, রক্তে কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ না করলে তা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। রক্তে ভালো কোলেস্টেরলের আধিক্যই একমাত্র এই ধরনের ঝুঁকি কমাতে পারে।
প্রতিদিন সঠিকভাবে এক্সারসাইজ করলে এইচ ডি এল বাড়ে। যাদের তামাকে আসক্তি আছে তাদের তামাক ছাড়তে হবে। ডায়েটের ক্ষেত্রে বলব, প্রচুর পরিমাণ শর্করাজাতীয় খাদ্যগ্রহণ কমিয়ে মোনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করলে এইচ ডি এলের পরিমাণ বাড়ে। মোনো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে অলিভ অয়েল, ক্যানোলা অয়েল, বাদাম তেল, সান ফ্লাওয়ার অয়েলে। তাই বলে এই সব তেল প্রচুর পরিমাণে খাওয়া যাবে এমন নয়। সামান্য পরিমাণেই খাদ্যে ব্যবহার করতে হবে। এছাড়াও এইচ ডি এল বাড়ানোর ওষুধও পাওয়া যায়। সেগুলোও চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে খেতে হবে।
অন্যদিকে টাইপ-১ ডায়াবেটিসে লিপিড প্রোফাইলে সেভাবে অস্বাভাবিকত্ব দেখা যায় না। তাদের শরীরে সুগার লেভেল হাই থাকার কারণেই ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ বেশি থাকে। তাই সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখলেই লিপিড প্রোফাইল স্বাভাবিক হয়ে যায়।
মূল বিষয়টা হল, রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ স্বাভাবিক রেখে হার্টঅ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমানো।