অ্যানেমিয়াকে রক্তাল্পতা বললেও কোনো অ্যানেমিয়াতেই শরীরে রক্ত অল্প হয় না বা কমে যায় না। কমে রক্তের লোহিতকণিকার ভিতরকার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিমোগ্লোবিন । নিশ্বাসের সঙ্গে শরীরে ঢোকা অক্সিজেনের বাহক এই হিমোগ্লোবিন ওই গ্যাস গ্রহণ করে টকটকে লাল হয়ে ওঠে। রক্তের রং তাই লাল। তাই অ্যানেমিয়াকে রক্তাল্পতা না বলে ফ্যাকাসে রক্ত বলাই যুক্তিগ্রাহ্য। অ্যানেমিয়াতে বেশি আক্রান্ত হন শিশু ও গর্ভবতী মহিলারা। শাকপাতা গাদাগুচ্ছের খেলেই সারবে অ্যানেমিয়া এরকম ধারণা একশভাগ ভুল।
ব্যালেন্সড ডায়েট বা সুষম খাদ্য এরকম অ্যানেমিয়া প্রতিরোধ এবং প্রতিকারের একমাত্র উপায়। সুষম খাদ্য বলতে ভাত, রুটি, মুড়ি, ডাল, স্যালাড, শাকসব্জির পাশাপাশি রোজ একটু প্রাণীজ প্রোটিন যেমন মাছ, ডিম বা মাংশ। এরকম প্রাণীজ খাদ্যে থাকা আয়রন শরীরে গিয়ে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায়। অ্যানেমিয়ার মূল কারণ শরীরে মৌলিক লোহার জোগান আর সঞ্চয়ে ঘাটতি। আমাদের খাদ্যে লোহা থাকে দুধরণের। হিম গোত্রের লোহা পাওয়া যায় ডিম, মাছ, রেড মিট ও প্রাণীর লিভারে। বেশি বয়সের জন্য রেড মিট আর পলিউশানের জন্য প্রাণীর লিভার বা মেটে না খাওয়াই ভাল। ননহিম গোত্রের লোহা থাকে শাকপাতা, সবজিতে। এরকম লোহা শরীরে না ঢুকে অন্ত্র থেকে বেরিয়ে যায়, আয়রন ফাইটেট, আলেট বা কার্বনেট যৌগ হয়ে মলের সঙ্গে। শাকপাতা, কুলেখাড়ার রস, থোর, মোচা খেয়ে অ্যানেমিয়া সারানো তাই একটি ভূল ধারণা। আর অ্যানেমিয়ার আদর্শ ডায়েট হল মাছ বা ডিম রোজ খানিকটা খাওয়া, সঙ্গে ভাত, রুটি, শাকসবজি ও স্যালাড।