হার্টের কাজ হল নিজেকে পাম্প করে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় রক্ত পৌঁছে দেওয়া। রক্ত বয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজটা করে ধমনি বা আর্টারি। রক্ত সঞ্চালনের সময় আর্টারির দেওয়ালে যে চাপ তৈরি করে তাকেই ‘ব্লাড প্রেসার’ বলে। প্রত্যেক মানুষের নির্দিষ্ট একটা স্বাভাবিক রক্তের চাপ থাকে। এই চাপ স্বাভাবিকের বেশি হয়ে গেলেই তৈরি হয় নানা ধরনের সমস্যা। ব্লাড প্রেসার স্বাভাবিকের থেকে বেশি হয়ে গেলে তাকে উচ্চ রক্তচাপ বলে।
আধুনিক মতে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, কোনও ব্যক্তির বয়স ২০ পেরনোর পর, রক্তচাপ সবসবময় ১২০/৮০ হওয়া উচিত। অর্থাৎ ২০ বছরেও প্রেসার হবে ১২০/৮০। আবার ৮০ বছর বয়স হয়ে গেলেও তার ব্লাড প্রেসার হবে ১২০/৮০।
কোনও ব্যক্তির ব্লাড প্রেসার নানা কারণে বাড়ে। যার মধ্যে অন্যতম বড় কারণ হল আর্টারিতে কোলেস্টেরল জমা।
তামাক জাতীয় পদার্থের নেশা, দিনের পর দিন ধরে তৈলাক্ত খাদ্যগ্রহণ, অতিরিক্ত শর্করাজাতীয় খাদ্যগ্রহণ এবং কোনওরকম শারীরিক পরিশ্রম না করার ফলে হার্টের রক্তবাহী ধমনিতে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল জমার আশঙ্কা থাকে। এই জমে যাওয়া কোলেস্টেরলকে বলে প্লাক। জীবনযাত্রা নিয়ন্ত্রণ না করলে অল্পবয়সেই শরীরের বিভিন্ন ধমনির ভিতরের দেওয়ালে প্লাক জমে ধমনিগুলির দেওয়াল শক্ত হয়ে যায়। রক্ত যখন ওই ধমনির ভিতর দিয়ে যায়, তখন রক্তের চাপে ধমনির দেওয়াল আর সঠিকভাবে প্রসারিত হতে পারে না। যা থেকে রক্তচাপ বাড়ার আশঙ্কা থাকে। আবার এর ফলে কোষে কোষে সঠিকভাবে অক্সিজেন পৌঁছতে পারে না। হৃৎপিণ্ডকে আরও বেশি করে পাম্প করতে হয় যা থেকে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই চল্লিশ বছর বয়স হওয়া মাত্র রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা জানার জন্য পরীক্ষা করান। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ব্লাড প্রেসার নিয়মিত মাপান ও ওষুধ খান। এতে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকটাই কমবে। এইচ ডি এল বা ভালো কোলেস্টেরল বাড়ানোর ওষুধও বাজারে প্রচুর আছে। সেগুলি খেলেও উপকার পাওয়া যায়। এর সঙ্গে দরকার সঠিক জীবনযাত্রা। অর্থাৎ অ্যালকোহল, ধূমপানের মতো কুঅভ্যেস পরিত্যাগ করা। রেডমিট কম খেয়ে বরং ছোট মাছ খান। সারাদিনে কম করে ৪০ মিনিট ভালো করে এক্সারসাইজ করুন।